পূর্ব বাংলার ইতিহাসে ঢাকার নবাব ফ্যামিলি তথা খাজা ফ্যামিলির একটা বিশাল সিগনিফিকেন্স আছে। বৃটিশ আমলে এই ফ্যামিলির কার্যক্রমের মূল মোটিভ ছিলো পূর্ব বাংলার মানুষের উন্নতি করা। যেমন বঙ্গভঙ্গকে সর্বান্তকরণে সমর্থন করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেয়া এবং বিশাল পরিমাণ জমি দান করা। কিন্তু স্যার সলিমুল্লাহদের পরবর্তী প্রজন্মে তথা স্যার নাজিমুদ্দিনের সময় খাজা ফ্যামিলি মোটা দাগে পূর্ব বাংলার মানুষের এগেইন্স্টে অবস্থান নেয়।

কিন্তু ওই সময়ই খাজা ফ্যামিলিতে এক উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম ছিলেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক উর্ধতন কর্মকর্তা। লেফটেন্যান্ট জেনারেল খাজা ওয়াসিউদ্দিন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভবিতব্য চিফ অফ স্টাফ এবং তৎকালীন মাস্টার জেনারেল অফ অর্ডন্যান্স (এমওজি)। ভুট্টোর প্রথম পছন্দের জেনারেল।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর জন্মস্থানের মায়ায় তিনি পাক সেনাবাহিনীর প্রধানের পদ পদদলিত করে দেশে ফিরে আসেন। তিনি দেশের আসার পর সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিলো তার মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জেনারেলকে নবগঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ করা হবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা জুনিয়র অফিসারদের তীব্র প্রতিবাদে তাঁকে আর তার উপযুক্ত পদে সমাসীন করানো যায় নি। তিনি যদি সেনাবাহিনীর চিফ হতেন তাহলে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ওয়ারলর্ডসুলভ আচরণ নিয়ন্ত্রণে বহুলাংশে সক্ষম হতেন যার জন্য পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদের শাসনামলে একের পর এক সেনা ও বিমানবাহিনীর বিদ্রোহ হতো না। অনেক মূল্যবান প্রাণ রক্ষা পেতো। শুধু মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের ওয়ারলর্ডসুলভ আচরণ আর সরকারের দুর্বলতার জন্য এই পরিকল্পনা সাফল্যের মুখ দর্শন করতে সক্ষম হলো না।

Comments

Popular Posts